প্রাণের ধ্যানের মনের সংগঠন চৌদ্দগ্রাম ব্যাংকার্স সোসাইটি (CBS) ২০১৮ সালের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই এর সাথে জড়িয়ে গেছি। অনেক আবেগ-অনেক বিবেক অনেক মনোবাসনা নিয়ে জন্ম এই প্রতিষ্ঠান। সংগঠনের একঝাঁক তরুণ যুবক ব্যাংকার এটিকে সংগঠিত করার জন্য নিরলস কাজ করেছেন সত্য, তবে নেপথ্যে সাংগঠনিক কাঠামোকে শক্ত কাঠামোর উপর দাঁড় করানোর জন্য অভিভাবকত্ব দিয়েছেন অনেক প্রথিতযশা সিনিয়র ব্যাংকার বৃন্দ। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের সিনিয়র কর্মকর্তাবৃন্দ।

বর্তমান সময়ে ব্যাংকিং কমিউনিটি মজলুম জনগোষ্ঠী। ব্যাংকিং সেক্টরে প্যারাডাইম শীফট (paradigm shift ) বা রিজিম চেঞ্জ (regime change) অথবা পলিসি ইউ টার্ন হয়েছে, এটা মনে করি না। মনে করি গত ১০/ ২০ বছর বাংলাদেশ ব্যাংক যেভাবে ব্যাংকিং সেক্টর কে মনিটর করা হয়েছে, সেই মনিটরিং সিস্টেমে অনেক পজিটিভ পরিবর্তন বা stringent monitoring এসেছে। মনে আছে সংগঠনটির প্রথম বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল পুরানা পল্টনের পুষ্পধাম রেস্তোরায় একটি মিলনায়তনে। মঞ্চে বসে সেদিন ভাবছিলাম ,আর দেখছিলাম কতগুলো অসহায় মানুষ, কিসের টানে কিসের যেন আকর্ষণে এক হয়েছেন। তাদের চাহনিতে অনেক অব্যক্ত বেদনা, অনেক অকথিত কষ্ট, একটু গার্ডিয়ানশিপের অভাব স্পষ্টই প্রতিয়মান হচ্ছিল। মঞ্চ থেকে প্রতিটি মুখের দিকে আলাদাভাবে তাকিয়ে দেখছিলাম। এই কষ্টের ভাষা বুঝতে, অনুধাবন করতে মোটেই কষ্ট হয়নি।

সময়ের প্রেক্ষিতে ব্যাংকিং চাকুরী এখন অনেক চ্যালেঞ্জিং। প্রতিনিয়ত অসংখ্য চ্যালেঞ্জ, প্রতিকূলতা , প্রতিবন্ধকতা মনে হয় জীবনকে স্তব্ধ করে দিবে, মনে হয় সম্ভব নয় এই সংকট থেকে উত্তরণ। অনেকে অনেক অব্যক্ত বেদনায় নিশি যাপন করেন রাত্রি অতিবাহিত করেন, আল্লাহর দরবারে দুহাত তুলে মুক্তির পথ খোঁজেন। সবার দোয়া আল্লাহর দরবারে হয়তো কবুল হয় না।কারো দোয়া কবুল হয় কারো দোয়া ফেরত আসে। এখানে দোয়ার কোন দোষ নেই, চাওয়ার মধ্যে হয়তো ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে।

ব্যাংকারদের জন্য কিছু করা, তাদের পাশে দাঁড়ান, তাদের সাথে থাকা সহমর্মিতা প্রকাশ করা , উপকার করতে না পারলেও ধৈর্য ধরে তাদের কষ্টগুলি শুনে উত্তরণের কিছু পরামর্শ দেওয়া একটি মহৎ কাজ হিসেবে আমি মনে করি। তাদের পাশে দাঁড়ানো মানেই হচ্ছে একটি মজলুম কমিউনিটির পাশে দাঁড়ানো। চৌদ্দগ্রাম ব্যাংকার্স সোসাইটির সদস্য সংখ্যা বর্তমানে ৮০০ শত এর অধিক, সব ব্যাংকাররা যদি সদস্য হত তাহলে এটি বেড়ে সংখ্যা দাঁড়াত প্রায় ২৫০০ শত থেকে ৩০০০ এ। আমাদের এই আশা এক সময় হয়তো পূরণ হবে যদি সঠিক নেতৃত্ব দেওয়া যায়।

এই প্রতিষ্ঠানটিতে আরো নতুন নতুন ব্যাংকারের আবির্ভাব ঘটুক, নতুন যুব নেতৃত্বের বিকাশ ঘটুক, বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রকাশ ঘটুক, সব সময় মন থেকে এই কামনা করি। রিটায়ার্ড লাইফে যখন আমাদের আর ব্যাংকিং এর রুটিন কাজের ব্যস্ততা থাকবে না, সেদিন যদি চৌদ্দগ্রাম ব্যাংকার্স সোসাইটির কোন মিলনমেলায়, সমাবেশে সাবেক ব্যাংকার হিসেবে দাওয়াত পাই, তাহলে দর্শকের সাড়িতে বসে যে আনন্দ পাব, সে আনন্দ হয়তো এখন ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। তবে দু একটি সমাবেশে প্রবীণ ব্যাংকারদের কে যখন সামনের সারিতে দেখেছি তখন অনেক আনন্দ পেয়েছি উপভোগ করেছি। এ সংগঠনটি অনন্তকাল সঠিক রূপে প্রতিষ্ঠিত থাকুক এই কামনা করছি।



নুরুদ্দিন এম ছাদেক হোসাইন
উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক
সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড
সহ-সভাপতি
চৌদ্দগ্রাম ব্যাংকার্স সোসাইটি (সি বি এস )